টাক মাথায় চুল প্রতিস্থাপন করে কীভাবে
- আপডেট সময় : ০৮:১১:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ৪ বার পড়া হয়েছে
অল্প বয়সে মাথার চুল পড়ে গেলে নিজেদের মধ্যে অনেকটা অস্বস্তি কাজ করে। আর আত্মবিশ্বাসে অনেকটাই কমে যায়। তাইতো অনেকেই মাথায় চুল প্রতিস্থাপনের ব্যাপারে চিন্তা করে থাকেন। তবে এটি নির্ভর করে বিভিন্ন আনুষঙ্গিক বিষয়ের উপরে।
যদি মাথার সামনের অংশের চুল আগে পড়ে যায় সেটাকে বলা হয় টেম্পোরাল এরিয়া। সাধারণত আমাদের মাথার পেছনের দুই পাশের অংশে চুল ঝরে যায়। এবং এই অংশে আমাদের শেষ বয়স পর্যন্ত ভালো চুল থেকে যায়। তাই এটাকে বলা হয় পার্মানেন্ট বা ডোনার এরিয়া। টাক মাথায় হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন সিস্টেমের মাধ্যমে মাথার পেছনের এই অংশ হতে চুল গুলি এনে সামনের অংশে বসানো হয়। এই পদ্ধতিতে ভ্রু কিংবা দাড়িতেও চুল প্রতিস্থাপন করা যায়।
তবে হেয়ার ট্রান্সপোর্ট করার জন্য অবশ্যই দক্ষ এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।
টাক মাথায় কি কি উপায়ের চুল প্রতিস্থাপন করা যায়
১। প্রথম অংশটির নাম ফলি কিউলার ইউনিট ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন। এই পদ্ধতিতে আমাদের মাথার পেছনের এবং কানের দুই পাশের অংশ হতে চুল গুলো নিয়ে মাথার সামনের অংশে স্থাপন করা হয়। এর মাধ্যমে মূলত আধা ইঞ্চি পরিমাণে গ্রাফট সংগ্রহ করে সেগুলো প্রতিস্থাপন করা হয়ে থাকে।
২। দ্বিতীয় পদ্ধতিতে একটি মাইক্রো মোটরের সাহায্যে যে অংশে চুল রয়েছে সেখান থেকে চুল গুলো তুলে এনে আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে মাথার সামনের অংশে স্থাপন করা হয়। এই পদ্ধতিতে মাথার ত্বকের ছোট ছোট ছিদ্র করে সেখানে চুল স্থায়ীভাবে বসিয়ে দেওয়া হয়।
৩। তৃতীয় পদ্ধতিটি হচ্ছে ডাইরেক্ট হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন। এই চিকিৎসা পদ্ধতিতে একটি কলমের মতো দেখতে যন্ত্রটি ব্যবহার করে প্রতিটি চুলকে আলাদাভাবে তুলে ফেলা হয়। তারপর সে চুল গুলোতে এটাক অংশে প্রতিস্থাপন করা হয়। যদিও এই পদ্ধতিটিতে প্রতিটি চুল আলাদাভাবে তোলা হয় বিধায় অনেক সময় লাগে তবে জটিলতা অনেক কম।
হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন করার আগে কি কি বিষয় বিবেচনা করা উচিত
যদিও আপনি চুল প্রতবস্থাপন করেন তবু সেটা দেখতে কেমন হবে তা নির্ভর করে আনুষঙ্গিক কয়েকটি বিষয়ের উপর। আপনাদের যে অংশ থেকে চলেছেন সে অংশ চুল গুলো যদি অনেক বেশি ঘন হয়ে থাকে ভালো রেজাল্ট পাওয়া যাবে। এক্ষেত্রে পাতলা এবং কালো রঙের চুলের চাইতে ধূসর কিংবা ফিকে কালারের চুরই সবচাইতে ভালো ফলাফল দিতে পারে।
আর প্রতিস্থাপনার পর সে চুল গুলির গোড়া শক্ত হতে এবং নতুন চুল গজাতে আরও বেশ কয়েক মাস সময় লাগতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নয় মাস পর্যন্ত সময় লেগে যায়। আবার যারা অতিরিক্ত ধূমপান করেন তাদের ক্ষেত্রেও দেখাতে পারে কিছু সমস্যা।
চুল প্রতিস্থাপনের পর করণীয় কি
সার্জারির পর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। প্রথম থেকে কিছুদিন স্বাভাবিক অসুবিধা কিংবা অসুস্থতা বোধ হতে পারে। চিকিৎসকরা সাধারণত মাথায় ২ থেকে ৩ দিন ব্যান্ডেজ পেঁচিয়ে রাখতে বলে থাকে।
প্রথমবার সার্জারি সম্পন্ন করার পর মনে হতে পারে মাথায় বড় কোন আঘাত লেগেছে কিংবা মাথার ফুলে গেছে এমনকি আরশের অনুভূতি হতে পারে। তারপর মাথায় কিছু পরিমাণে স্ক্রাবও দেখা যেতে পারে। তবে এ ধরনের সমস্যা গুলি কিছুদিন পরেই আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যায়। তবে আপনি যদি হেয়ার ট্রান্সপ্লান্টেশন করে থাকেন তাহলে নিন্মোক্ত নিয়ম গুলো মেনে চলুন।
• যেকোনো ধরনের ব্যায়াম কিংবা শারীরিক অনুশীলন থেকে নিজেকে কিছুদিন বিরত রাখুন।
• অধিক শক্তি ব্যয় হয় এই ধরনের কাজ করা উচিত নয়। এতে করে যেতে পারে ব্লাড প্রেসার এমনকি ক্ষতস্থান থেকে রক্ত বের হতে পারে।
• সফলভাবে চুল প্রতিস্থাপন ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন করানোর পর চুলের জন্য উপকারী ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত।
এছাড়া চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত মেডিসিন গ্রহণ এবং যেকোনো ধরনের সমস্যায় দ্রুত ডাক্তারের কাছে যাওয়া প্রয়োজন।