আবাসিক হোটেল ভাড়ার নিয়ম | কত টাকা খরচ হয়
- আপডেট সময় : ১০:৪৩:২৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ১১ বার পড়া হয়েছে
প্রায় সময়ই বিভিন্ন প্রয়োজন কিংবা ঘোরার উদ্দেশ্যে নিজের বাসা থেকে দূরে কোথাও যেতে হয়। সেই এলাকাতে আত্মীয়-স্বজন না থাকলে আমাদেরকে আবাসিক হোটেল ভাড়া করতে হয়। অল্প বাজেট থেকে শুরু করে অনেক টাকা বাজেট দিয়ে বাংলাদেশে অনেক ভালো মানুষের হোটেল ভাড়া করা যায়। আপনারা চাইলে ১,২,৩ দিন থেকে শুরু করে যতদিন খুশি থাকতে পারেন তাদের নির্ধারিত চার্জ পরিশোধ করে।।
তবে অপরিচিত কোন জায়গায় হঠাৎ করেই হোটেল ভাড়া করার আগে কিছু নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে অবশ্যই অবগত থাকা প্রয়োজন। আমি আজকে আপনাদের সাথে সেই নিয়মাবলী সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
আবাসিক হোটেল কাকে বলে
এটি মূলত একটি অ্যাপার্টমেন্ট বা বিল্ডিং যেখানে বিভিন্ন ডেকোরেশনের রুম পাওয়া যায় থাকার জন্য। যার মধ্যে রয়েছে সিঙ্গেল রুম, কাপল রুম, ফ্যামিলি রুম ইত্যাদি। অর্থাৎ আপনি চাইলে একা থাকার জন্য ভাড়া নিতে পারবেন আবার ফ্যামিলি নিয়ে থাকার জন্য ভাড়া নিতে পারবেন।
এ সকল হোটেল গুলোতে বিশেষ কিছু সুবিধা রয়েছে। যেমন রুমের ভেতর সকল ডেকোরেশন দেওয়া থাকে। বিছানার চাদর, বালিশ, টিভি, সোফা, টেবিল, এমনকি ভালো মানের হোটেল গুলোতে দাঁত ব্রাশ করা সরঞ্জাম থেকে শুরু করে বাকি সকল কিছুই দেয়া হয়ে যায়। শেষ হতে রয়েছে খাবার ও ইন্টারনেট সুবিধা।
সাধারণত ১-২ দিন কিংবা সপ্তাহ খানেক থাকার জন্য মানুষ এ ধরনের হোটেল গুলোকে সবচাইতে বেশি পছন্দ করে।
আবাসিক হোটেল ভাড়া করার আগে আপনারা যে নিয়ম গুলো জানা দরকার
• ভালো মানের যেকোনো হোটেল কিংবা রিসোর্টে থাকার জন্য আপনাকে অবশ্যই ভোটার আইডি কার্ড, পাসপোর্ট কিংবা ড্রাইভিং লাইসেন্স জমা দিতে হবে। বিদেশি নাগরিক হলে পাসপোর্ট কিংবা ভিসার কপি তারা দেখতে চাইবে।
• দেশ কিংবা দেশের বাইরে যে কোন বাণিজ্যিক কিংবা পর্যটন এলাকাতে রুম ভাড়া করতে চাইলে আগে থেকেই বুকিং দিয়ে রাখতে হয়। এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বুকিং করার সময় কিছু ফি অ্যাডভান্স প্রদান করতে হয়।
• প্রতিটি আবাসিক হোটেল, ফাইভ স্টার হোটেল চেক ইন এবং চেক আউটের একটি নির্দিষ্ট সময় আছে। চেক ইনার সময় হয়ে থেকে সাধারণত দুপুর ১২ টা থেকে ১ টার মধ্যে এবং চেক আউটের সময় হয়ে থাকে সকাল ১১ টা থেকে ১২ টার মধ্যে। এর মানে হচ্ছে একদিন দুপুর ১২ টায় আপনি হোটেলে প্রবেশ করলে পরের দিন ১১ টায় আপনার একদিন পূর্ণ হবে।
• আপনি যদি বুকিং এ নির্ধারিত সময় ছাড়া আর অতিরিক্ত দিন থাকতে চান তাহলে আপনাকে আবার ফি প্রদান করতে হবে।
• অনেক Hotel এবং রিসোর্টের নিজস্ব কিছু নীতিমালা থাকে। যেগুলো আপনাকে আগে থেকে জানিয়ে দেয়া হবে। যার মধ্যে রয়েছে সকল হোটেলে ধূমপান করা যায় না কিংবা পোষা পানিও রাখা যায় না। আবার অনেক হোটেলে পোষা পানি রাখার জন্য বিশেষ এবং সুব্যবস্থাও থাকে।
• ফাইভ স্টার হোটেল কিংবা Resort গুলোতে আপনার মূল্যবান জিনিসপত্র সংরক্ষণ করার জন্য একটি লকার আপনাকে দেয়া হয়ে থাকে।
হোটেলের বুকিং বাতিল করতে চাইলে করণীয় কি
আপনি নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য হোটেল বুকিং করলেন এবং অগ্রিম প্রিয় প্রদান করলেন। পরবর্তীতে যদি সেটি বদল করতে চান তাহলে অবশ্যই প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা অনুযায়ী বাতিল করতে হবে। এই ক্ষেত্রে তারা নির্দিষ্ট পরিমাণের ফি রাখতে পারে। এর জন্য সরাসরি কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা দরকার।
রিসোর্ট বুকিং করার জন্য কি কি লাগে কিংবা জমা প্রদান করতে হয়
বয়স অনুযায়ী ভোটার আইডি কার্ড কিংবা জন্ম নিবাস সনদ। আপনি যদি পরিবারের সাথে থাকতে চান তাহলে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের জন্ম নিবন্ধন অথবা পাসপোর্ট সাইজের ছবিও প্রয়োজন হতে পারে। এটি নির্ভর করে প্রতিষ্ঠান ভেদে। আবার বিবাহিত দম্পতিদের ক্ষেত্রে বিয়ের কাগজপত্রও বর্তমানে চাওয়া হয়ে থাকে। যেকোনো জায়গায় ঘুরতে যাওয়ার জন্য বিয়ের কাগজ সাথে রাখাই উত্তম। এতে করে নানা ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি হতে আপনি বেঁচে যাবেন।
কম খরচে সেরা আবাসিক হোটেল ভাড়া করার উপায় কি
যদি আপনার পূর্ব কোন অভিজ্ঞতা না থাকে তাহলে অনেক ক্ষেত্রেই প্রতারণার শিকার করতে পারেন। ছোট ছোট আবাসিক হোটেল গুলোতে অনেক দালাল থেকে যারা বাড়তি টাকা নিতে পারে আপনার কাছ থেকে।
এজন্য ভাড়া সম্পর্কেও আপনার কিছুটা ধারণা রাখা উচিত। সবচাইতে ভালো উপায় হচ্ছে সরাসরি হোটেল কর্তৃপক্ষ কিংবা হোটেল ম্যানেজারের সাথে যোগাযোগ করা। এতে করে আপনি উপযুক্ত এবং সাশ্রয় মূল্যে রুম ভাড়া করতে পারবেন বলে আশা করা যায়।
তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নানা অজুহাতে আপনার কাছে রুম ভাড়া বেশি যেতে পারে। এক্ষেত্রে আপনি কিছুটা দামাদামি করবেন এবং আশেপাশের অন্যান্য হোটেল রিসোর্টতে খোঁজখবর নিবেন। তবে এই ভাড়ার পরিমাণ নির্ভর করে মূলত হোটেলে পরিবেশের উপর।
আপনি যদি হোটেল দিতে গিয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে সুযোগ-সুবিধা দেখতে পারেন সুন্দরভাবে সাজানো গোছানো থাকে পার্কিংয়ের সুব্যবস্থা থাকে এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে স্টাফ থাকে তাহলে ধরে নিতে পারেন সেখানে অন্যান্য পরিবেশে ভালো হবে।
আপনি আরো কিছু আনুষঙ্গিক বিষয় লক্ষ্য করতে পারেন যেমন ফ্রি ওয়াইফাই আছে কিনা, এসি আছে কিনা, রুম টাইলস করা কিনা, বারান্দা আছে কিনা ইত্যাদি।
সাধারণত ভালো মানের হোটেল গুলোতে একজনের ১ রাত থাকার জন্য খরচ হতে পারে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা। তবে সিজন এবং সময় বেঁধে এটি বাড়তে পারে কিংবা কমতে পারে। না যদি আপনি ফাইভ স্টার হোটেলে থাকতে চান তাহলে প্রতি রাতের জন্য খরচ হতে পারে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা। তবে বুকিং দেওয়ার আগে অবশ্যই জানিয়ে নেবেন যে সকালের নাস্তা কিংবা এই ফি এর মধ্যে তারা কি কি সুবিধা প্রদান করবেন। এর কারণ হচ্ছে ফাইভ স্টার হোটেল গুলোতে এর বুকিং খরচের মধ্যে নাস্তা এবং অন্যান্য খাবার প্রদান করে থাকে।
বাংলাদেশের জনপ্রিয় হোটেলের নাম কি
ঢাকার সেরা হোটেল গুলোর মধ্যে সবচাইতে বেশি বিলাসবহুল হচ্ছে ইন্টার কন্টিনেন্টাল হোটেল। এটি রাজধানীর রমনায় অবস্থিত। এটি ছাড়াও অনেক অন্য তোমাদের হোটেল রয়েছে। এই ধরনের বড় বড় হোটেল গুলোতে সাধারণত বিদেশী পর্যটকরা এসেই বেশি থাকেন।
আমাদের শেষ কথা
কোথাও বেড়াতে গেলে সবচাইতে প্রয়োজনীয় বিষয় হচ্ছে সুন্দর একটি থাকার জায়গা। আমি আজকে আবাসিক হোটেল ভাড়া করার নিয়ম সম্পর্কে আপনাদের সাথে আলোচনা করেছে। এছাড়াও আপনারা ইন্টারনেটে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট হতেও রুম বুকিং দিতে পারবেন। এমনকি সে সকল হোটেলের রিভিউ গুলো দেখে ওদের নিতে পারবেন সার্ভিস সম্বন্ধে।