দক্ষিণ কোরিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি এবং বেতন কত

- আপডেট সময় : ০৩:৪৩:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪ ৫২ বার পড়া হয়েছে
আমরা অর্থ উপার্জনের জন্য নানা কাজ করে থাকি। জীবনের কঠিন সিদ্ধান্ত নেই এবং বিভিন্ন ধরনের কাজে নিজেদেরকে নিয়োজিত করি। যেহেতু পরিবার এবং নিজের বর্তমান ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আমরা বড় বড় সিদ্ধান্ত নেই তাই যেকোনো কাজে যোগদান করার আগে ভালোভাবে সেটা সম্পর্কে জানা উচিত। তাইতো আমি আজকে আপনাদেরকে জানাবো দক্ষিণ কোরিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি এবং কোন কাজে বেতন বেশি।
নিজের পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন, গ্রাম ছেড়ে মানুষ বিদেশে পাড়ি জমায় আর্থিক স্বচ্ছলতার আশায়। এমনকি বছরের পর বছর নিজের মা, বাবা, ভাই, বোন, বউ, সন্তান ইত্যাদি থেকে দূরে থাকতে হয়। বিদেশ গেলে সাধারণত ২ থেকে ৩ বছরের মধ্য কোনো ছুটিও পাওয়া যায় না। তাই কোথাও যাওয়ার আগে আমাদেরকে ভালোভাবে বোঝা উচিত আপনার এইটা আপনার পরিবারের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে কিনা। আজকে আমি আলোচনা করব দক্ষিণ কোরিয়া কোন কাজের বেতন বেশি এবং সেগুলো কত। এছাড়াও কোন ধরনের কাজে আপনি প্রতি মাসে কি ধরনের অর্থ উপার্জন করতে পারবেন সেটি নিয়ম।
দক্ষিণ কোরিয়া দেশ নিয়ে কিছু তথ্য
বিশ্বের অন্যতম একটি দ্রুত বর্ধনশীল দেশ হচ্ছে সাউথ কোরিয়া। যার ফলে প্রতিনিয়ত এখানে তৈরি হচ্ছে অনেক অনেক কর্মসংস্থান। এমনকি সাউথ কোরিয়া বা দক্ষিণ কোরিয়ার প্রাকৃতিক পরিবেশসহ অত্যন্ত সুন্দর। এখনকার তরুণ তরুণীদের কাছে এটি বেশি জনপ্রিয় এর সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের কারণে।
সাউথ কোরিয়ার বিভিন্ন ধরনের সিনেমা, ব্যান্ড দল, সিরিজ ইত্যাদি সারা দেশ জুড়ে ব্যাপক সাড়া ফেলায়। তাইতো লেখাপড়ার জন্য অনেকেই এই দেশটি বেছে নিচ্ছে। কিন্তু প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর সাংস্কৃতিক বিষয়ে দিয়ে তো আর ক্যারিয়ার গড়বে না এর জন্য জানা দরকার কর্মক্ষেত্র সম্পর্কে।
আমার আর্টিকেলের সূচিপত্র
১। দক্ষিণ কোরিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি
২। সাউথ কোরিয়া কোন কাজের বেতন বেশি
৩। দক্ষিণ কোরিয়া সম্পর্কে অন্যান্য বিষয়াদি
দক্ষিণ কোরিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি
কাজ যেমনই হোক সবার আগে আপনাকে পরিশ্রমী হতে হবে। কারণ সেখানে সব ধরনের কাজেরই বেশ চাহিদা রয়েছে। এমনকি সাউথ কোরিয়ার মানুষও অনেক পরিশ্রমী। আপনি যদি সেখানে যান তাহলে আপনাকে দৈনিক সর্বনিম্ন ৮ ঘণ্টা এবং মাসের ২০৯ ঘন্টা কাজ করতে হতে পারে। প্রতি মাসে কাজ করতে হয় কমপক্ষে ২৬ দিন।
তাছাড়াও আপনি যদি বাড়তি উপার্জন করতে চান কিংবা ওভার টাইম করতে যান সে ক্ষেত্রে কর্মঘন্টা আরো বেশি বৃদ্ধি পাবে। আমি নিচে এমন কিছু কাজের নাম উল্লেখ করছি যেগুলোর চাহিদা শুধুমাত্র দক্ষিণ কোরিয়াতেই নয় বরং সারা পৃথিবীতে রয়েছে।
১। ড্রাইভিং এর কাজ
২। মেকানিক্স এবং ইলেকট্রিশিয়ানের কাজ
৩। কন্সট্রাকশন সাইটের নির্মাণ শ্রমিক
৪। জাহাজ শিল্পের শ্রমিক
৫। বিভিন্ন ধরনের কৃষি কাজ
৬। কারখানায় শ্রমিকের চাকরি।
৭। নিরাপত্তা কর্মীর যা কাজ
৮। পরিছন্নতা কর্মীর কাজ
৯। ক্লিনারের কাজ
এছাড়াও নার্স, গৃহকর্মী ইত্যাদিরও ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তবে আপনি যেই কাজেই করেন না কেন সে একটি সম্পর্কে অবশ্যই দক্ষ হওয়া প্রয়োজন। এক্ষেত্রে সবচাইতে ভালো হয় বাংলাদেশ থেকে যথাযথ প্রশিক্ষণ এবং কোর্স সম্পন্ন করে যাওয়ার।
দক্ষিণ কোরিয়া কোন কাজের বেতন বেশি
কাজের বেতন মূলত নির্ভর করে অভিজ্ঞতা এবং আপনার যোগ্যতার উপরে। প্রাথমিক অবস্থায় সকল কাজেরই বেতন কিছুটা কম হয়ে থাকে। তবে বড় বড় কিছু প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেখানে আপনার দক্ষতা এবং যোগ্যতার সাপেক্ষে অনেক বেশি টাকা উপার্জন করতে পারেন। তবে দক্ষিণ কোরিয়ার কোন কাজের বেতন কত সে সম্পর্কে কিছুটা চলুন জেনে নেয়া যাক।
• যারা সফটওয়্যার ডেভেলপার কিংবা সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার তারা প্রতি মাসে সাউথ কোরিয়া থেকে ৪ লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ টাকা ইনকাম করতে পারেন।
• দক্ষ ইলেকট্রিক্যাল, মেকানিক্যাল ইত্যাদি ইঞ্জিনিয়াররাও যদি অনেক বেশি পরিশ্রম করেন তাহলে প্রতি মাসে ৪ লক্ষ টাকা উপার্জন করতে পারবেন।
• যথাযথভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্সরা দক্ষিণ করে কাজ করে মোটামুটি ৩ লক্ষ থেকে ৩,৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত ইনকাম করতে পারেন।
• দক্ষিণ কোরিয়া যদি আপনি শিক্ষক হিসেবে কোন প্রতিষ্ঠানে যোগদান করেন তাহলেও প্রতি মাসে ২ লক্ষ থেকে ৩ লক্ষ টাকা উপার্জন করতে পারবেন।
• যারা বিভিন্ন হাসপাতালে, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে, বাসা বাড়িতে ক্লিনার পদের কাজ করেন তাদের বেতন হয়ে থাকে ১ লক্ষ থেকে ১ লক্ষ 50 হাজার টাকা পর্যন্ত।
• দক্ষিণ কোরিয়া রেস্টুরেন্টে চাকরি করলে মোটামুটি ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বেতন পাওয়া যায়।
• বিভিন্ন ধরনের কনস্ট্রাকশন সাইটে নির্মাণ শ্রমিকরা ১ লক্ষ থেকে ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন পেয়ে থাকে।
এছাড়াও সাউথ কোরিয়া গিয়ে যারা বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রিশিয়ান, কৃষিকাজ কিংবা ফ্যাক্টরিতে চাকরি করে তারা মোটামুটি ১ লক্ষ টাকার অধিক বেতন পেয়ে থাকেন।
বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছরের সরকারিভাবেও এই দেশটিতে জনবল রপ্তানি করা হয়ে থাকে। এজন্য আপনাকে সব সময় সরকারি বিজ্ঞপ্তি এবং প্রজ্ঞাপন গুলি খেয়াল রাখতে হবে। এমনকি এই ধরনের কোন যদি বিজ্ঞপ্তি প্রদান করা হয় তাহলে আমরা সাথে সাথে আমাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আপডেট খবর জানিয়ে দেব।
আর যে কোন দেশের ভিসা পাওয়ার জন্য কিংবা যাওয়ার জন্য অবশ্যই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো আগে থেকেই জোগাড় করে রাখবেন। যার মধ্যে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্ম নিবন্ধন সনদ, পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি, ভিসার আবেদন, নির্ধারিত ফি, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র, প্রশিক্ষণের সার্টিফিকেট ইত্যাদি। এমনকি যাওয়ার আগে একটি মেডিকেল টেস্ট করানো হয়ে থাকে।
তাই আপনি যদি কোন শারীরিক সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে আগে থেকেই চিঠি চিকিৎসা নিয়ে সেটা সনদপত্র সাথে রাখা ভালো। আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে করোনার টিকার সনদ। অর্থাৎ আপনি যখন করোনার ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন তখন একটি কার্ড দেয়া হয়েছিল সেটি অবশ্যই প্রয়োজন হবে।
দক্ষিণ কোরিয়ায় সম্পর্কে অন্যান্য বিষয়াদি
উপরিক্ত তালিকাটি যে সবসময়ই সঠিকভাবে বিষয়টি তা নয়। কারণ আপনি জানেন যে কোন দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা সবসময়ই বৃদ্ধি পায় এবং হ্রাস পায়। তাছাড়াও আপনার কোন মাধ্যমে যাচ্ছেন কি ভিসায় যাচ্ছেন কোন প্রতিষ্ঠানে যোগদান করছেন আপনার দক্ষতা কি শিক্ষাগত যোগ্যতা কি ইত্যাদি বিষয়ের উপরে আসলে মাসিক ইনকাম কিভাবে বেতন নির্ধারিত হয়।
তাই আপনি যে এজেন্সি বা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বেছে নিতে যাচ্ছেন কিংবা দক্ষিণ কোরিয়াতে যে প্রতিষ্ঠানে যোগদান করছেন সেটা সম্পর্কে ভালোভাবে খবর নিন। তা না হলে আপনি প্রতারিত হতে পারেন। আশা করি দক্ষিণ কোরিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি এবং কোন কাজের বেতন কত সে সম্পর্কে আপনারা এখন জেনে গিয়েছেন।