শরীরে বা হাতে মেহেদী ব্যবহার করলে কি ওজু হবে

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:১০:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ৩ বার পড়া হয়েছে

মেহেদী ব্যবহার করলে কি ওজু হবে

আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বেহেস্তের চাবি নামাজ। আর শুদ্ধভাবে নামাজ পড়ার অন্যতম পূর্ব শর্ত হচ্ছে ওজু এবং পবিত্রতা অর্জন করা। অজু একটি আরবি শব্দ। এর আভিধানিক অর্থ হচ্ছে পরিচ্ছন্ন, সুন্দর এবং স্বচ্ছ। পারিভাষিক ভাষায় ইসলামের একটি বিশেষ নিয়মে পবিত্রতা অর্জন করা কিংবা অঙ্গ ধরা কে বলা হয়ে থাকে ওজু। আজকে আমি আলোচনা করব মেহেদী ব্যবহার করার পর ওজু হবে কিনা।

পবিত্র পানি দিয়ে শরীর এবং অঙ্গ গুলি ভালোভাবে ধৌত করাকে বলা হয় গোসল। এটিও একটি আরবি শব্দ এবং এর অর্থ হচ্ছে পুরো শরীর ধোয়া। মূলত আমরা মহান আল্লাহ তাআলার নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে ইবাদত ও পবিত্রতা অর্জন করার জন্য গোসল করে থাকি। সঠিক উপায়ে গোসল করার দিকনির্দেশনাও ইসলামে দেওয়া রয়েছে। আমি আজকে মেহেদী পড়ে ওজুর বিষয়ে বাংলাদেশের স্বনামধন্য আলেমগনের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে আলোচনা করবো।

মেহেদী ব্যবহার করে কি ওজু করা যাবে

এই প্রশ্নের উত্তরে ফুকাহায়ে কেরামগণ জানান, সাজসজ্জার উদ্দেশ্যে আমাদের জন্য মেহেদী ব্যবহার করা জায়েজ। এমনকি হাতে মেহেদি লাগানোর পর সেটি উপরের ভাগের প্রলেপ তুলে ফেলে গোসল করলে সেটি শুদ্ধ হয়ে যাবে। আমরা যে মেহেদি গুলো সাধারণত শরীরে ব্যবহার করে সেটির যে রং লেগে থাকে সেখান থেকে পরবর্তীতে আবরণের মত কোন কিছু ওঠে না। যার কারণে গোসল কিংবা অজু করার সময় ত্বকের মধ্যে পানি পৌঁছাতেও অসুবিধা হয় না। তাই এগুলো ব্যবহার করে ওজু শুদ্ধ হয়ে যাবে।

কিন্তু এমন কোন বস্তু বা উপাদান যেগুলো ত্বকের চামড়ার সাথে লেগে যায় এবং আবরণের তৈরি করে অনেকটা প্লাস্টিকের মত, আর সেগুলোর কারণে যদি পানি ত্বকে পানি পৌঁছাতে বাঁধা তৈরি হয় তাহলে অজু হবে না।

তাই আমাদের এমন কোন উপাদান ব্যবহার করা উচিত না যেটি আমাদের ত্বকের উপর আবরণ তৈরি করে এবং পানি পৌঁছাতে বাঁধা তৈরি করে। তা না হলে সঠিক এবং বিশুদ্ধভাবে ওজু করার জন্য আপনাকে সেগুলো অবশ্যই তুলে ফেলতে হবে।

ফরজ গোসল করা এবং ওযু করার নিয়ম কি

ওযুর ফরজ মূলত ৪টি। যার মধ্যে হচ্ছে

১। পুরো চেহারা ভালোভাবে ধৌত করা,
২। উভয় হাতের কনুই পর্যন্ত পানি দিয়ে ধৌত করা
৩। মাথা মাসেহ করা
৪। দুই পায়ের টাকনু পর্যন্ত ধোয়া

হাত-পা ইত্যাদি ধৌধ করার সময় অবশ্যই ডান দিক থেকে শুরু করতে হবে। ওযু শুদ্ধ করার জন্য এই ৪টি ফরজ কাজ অবশ্যই করতে হবে। তবে ওযুর আরো বেশ কিছু সুন্নত রয়েছে দোয়া রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে পরিপূর্ণভাবে ওযু করা যায় এবং সওয়াব লাভ করা যায়।

তবে বাজারে এখন বেশিরভাগই কৃত্রিম টিউব মেহেদী কিনতে পাওয়া যায়। আগেকার দিনের মানুষ গাছ হতে মেহেদী পাতা সিয়ে সেগুলো থেকে পেস্ট তৈরি করে ব্যবহার করতো। কিন্তু বর্তমানে টিউব মেহেদী গুলোতে বেশিরভাগই কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশের বিভিন্ন আলেমগণের মতে এই টিউব মেহেদী গুলোতে ব্যবহার করলেও ওজু হয়ে যাবে। তবে এর কারণে ত্বকে যদি ভারি কোন আস্তরণ পড়ে যেটির নখ দিয়ে তুলতে পারেন এবং সে তার কারণে পানি না পৌঁছায় তাহলে ওযু হবে না। তাছাড়া টিউব মেহেদী ব্যবহার করলেও ওযু হয়ে যাবে।

আবার যে সকল নারীরা বিভিন্ন ধরনের অলংকার ব্যবহার করে থাকেন তাদের সেই অলংকারের ছিদ্র গুলোতে পানি পৌঁছানো জরুরী। আর যদি অলংকার না পড়ে থাকে তাহলে সাধারণভাবে পানি পৌঁছালেই হবে। অনেক সময় আমাদের কান সংকীর্ণ হয়ে যাওয়ার কারণে পানি পৌঁছাতে সমস্যা হয়। সেক্ষেত্রে হাতের আঙ্গুল ব্যবহার করে ওই স্থানে নাড়াচড়া করে ভালোভাবে পানি পৌঁছে দেওয়া প্রয়োজন।

আর মেহেদী ব্যবহার করে ওজু করলে সেটি শুদ্ধ হয়ে যাবে এ ব্যাপারে কোন সমস্যা নেই। তবে বাংলাদেশের জনপ্রিয় আলেম শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন “সৌদির বিভিন্ন হুজুররা বলে থাকেন যে, কানের ভেতরের অংশ আমাদের শরীরের অভ্যন্তরের অংশগুলোর মত তাই সেখানে পানি পৌঁছানো জরুরি নয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

OPXNews Stuff

OPX NEWS Stuff

শরীরে বা হাতে মেহেদী ব্যবহার করলে কি ওজু হবে

আপডেট সময় : ০৯:১০:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪

বেহেস্তের চাবি নামাজ। আর শুদ্ধভাবে নামাজ পড়ার অন্যতম পূর্ব শর্ত হচ্ছে ওজু এবং পবিত্রতা অর্জন করা। অজু একটি আরবি শব্দ। এর আভিধানিক অর্থ হচ্ছে পরিচ্ছন্ন, সুন্দর এবং স্বচ্ছ। পারিভাষিক ভাষায় ইসলামের একটি বিশেষ নিয়মে পবিত্রতা অর্জন করা কিংবা অঙ্গ ধরা কে বলা হয়ে থাকে ওজু। আজকে আমি আলোচনা করব মেহেদী ব্যবহার করার পর ওজু হবে কিনা।

পবিত্র পানি দিয়ে শরীর এবং অঙ্গ গুলি ভালোভাবে ধৌত করাকে বলা হয় গোসল। এটিও একটি আরবি শব্দ এবং এর অর্থ হচ্ছে পুরো শরীর ধোয়া। মূলত আমরা মহান আল্লাহ তাআলার নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে ইবাদত ও পবিত্রতা অর্জন করার জন্য গোসল করে থাকি। সঠিক উপায়ে গোসল করার দিকনির্দেশনাও ইসলামে দেওয়া রয়েছে। আমি আজকে মেহেদী পড়ে ওজুর বিষয়ে বাংলাদেশের স্বনামধন্য আলেমগনের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে আলোচনা করবো।

মেহেদী ব্যবহার করে কি ওজু করা যাবে

এই প্রশ্নের উত্তরে ফুকাহায়ে কেরামগণ জানান, সাজসজ্জার উদ্দেশ্যে আমাদের জন্য মেহেদী ব্যবহার করা জায়েজ। এমনকি হাতে মেহেদি লাগানোর পর সেটি উপরের ভাগের প্রলেপ তুলে ফেলে গোসল করলে সেটি শুদ্ধ হয়ে যাবে। আমরা যে মেহেদি গুলো সাধারণত শরীরে ব্যবহার করে সেটির যে রং লেগে থাকে সেখান থেকে পরবর্তীতে আবরণের মত কোন কিছু ওঠে না। যার কারণে গোসল কিংবা অজু করার সময় ত্বকের মধ্যে পানি পৌঁছাতেও অসুবিধা হয় না। তাই এগুলো ব্যবহার করে ওজু শুদ্ধ হয়ে যাবে।

কিন্তু এমন কোন বস্তু বা উপাদান যেগুলো ত্বকের চামড়ার সাথে লেগে যায় এবং আবরণের তৈরি করে অনেকটা প্লাস্টিকের মত, আর সেগুলোর কারণে যদি পানি ত্বকে পানি পৌঁছাতে বাঁধা তৈরি হয় তাহলে অজু হবে না।

তাই আমাদের এমন কোন উপাদান ব্যবহার করা উচিত না যেটি আমাদের ত্বকের উপর আবরণ তৈরি করে এবং পানি পৌঁছাতে বাঁধা তৈরি করে। তা না হলে সঠিক এবং বিশুদ্ধভাবে ওজু করার জন্য আপনাকে সেগুলো অবশ্যই তুলে ফেলতে হবে।

ফরজ গোসল করা এবং ওযু করার নিয়ম কি

ওযুর ফরজ মূলত ৪টি। যার মধ্যে হচ্ছে

১। পুরো চেহারা ভালোভাবে ধৌত করা,
২। উভয় হাতের কনুই পর্যন্ত পানি দিয়ে ধৌত করা
৩। মাথা মাসেহ করা
৪। দুই পায়ের টাকনু পর্যন্ত ধোয়া

হাত-পা ইত্যাদি ধৌধ করার সময় অবশ্যই ডান দিক থেকে শুরু করতে হবে। ওযু শুদ্ধ করার জন্য এই ৪টি ফরজ কাজ অবশ্যই করতে হবে। তবে ওযুর আরো বেশ কিছু সুন্নত রয়েছে দোয়া রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে পরিপূর্ণভাবে ওযু করা যায় এবং সওয়াব লাভ করা যায়।

তবে বাজারে এখন বেশিরভাগই কৃত্রিম টিউব মেহেদী কিনতে পাওয়া যায়। আগেকার দিনের মানুষ গাছ হতে মেহেদী পাতা সিয়ে সেগুলো থেকে পেস্ট তৈরি করে ব্যবহার করতো। কিন্তু বর্তমানে টিউব মেহেদী গুলোতে বেশিরভাগই কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশের বিভিন্ন আলেমগণের মতে এই টিউব মেহেদী গুলোতে ব্যবহার করলেও ওজু হয়ে যাবে। তবে এর কারণে ত্বকে যদি ভারি কোন আস্তরণ পড়ে যেটির নখ দিয়ে তুলতে পারেন এবং সে তার কারণে পানি না পৌঁছায় তাহলে ওযু হবে না। তাছাড়া টিউব মেহেদী ব্যবহার করলেও ওযু হয়ে যাবে।

আবার যে সকল নারীরা বিভিন্ন ধরনের অলংকার ব্যবহার করে থাকেন তাদের সেই অলংকারের ছিদ্র গুলোতে পানি পৌঁছানো জরুরী। আর যদি অলংকার না পড়ে থাকে তাহলে সাধারণভাবে পানি পৌঁছালেই হবে। অনেক সময় আমাদের কান সংকীর্ণ হয়ে যাওয়ার কারণে পানি পৌঁছাতে সমস্যা হয়। সেক্ষেত্রে হাতের আঙ্গুল ব্যবহার করে ওই স্থানে নাড়াচড়া করে ভালোভাবে পানি পৌঁছে দেওয়া প্রয়োজন।

আর মেহেদী ব্যবহার করে ওজু করলে সেটি শুদ্ধ হয়ে যাবে এ ব্যাপারে কোন সমস্যা নেই। তবে বাংলাদেশের জনপ্রিয় আলেম শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন “সৌদির বিভিন্ন হুজুররা বলে থাকেন যে, কানের ভেতরের অংশ আমাদের শরীরের অভ্যন্তরের অংশগুলোর মত তাই সেখানে পানি পৌঁছানো জরুরি নয়।