ভিটামিন ই ক্যাপসুল কিভাবে রূপচর্চায় ব্যবহার করা যায়
- আপডেট সময় : ১১:২৫:৩৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ৪ বার পড়া হয়েছে
চুলের যত্ন কিংবা ত্বকের যত্ন উভয়ের ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয় ভিটামিন ই ক্যাপসুল। ছোট ছোট সবুজ কিংবা স্বচ্ছ হলুদ/কমলা রঙের এই ক্যাপসুলটি প্রায় সব ফার্মেসিতেই পাওয়া যায়। আবার ছেলে কিংবা মেয়ে যে কারো চুলের সমস্যায় কোনরকম ডাক্তারের সাথে পরামর্শ না করেই নিজের মত ভিটামিন ই ক্যাপসুল খাওয়া এবং ব্যবহার শুরু করি।
অনেকেই মনে করেন ভিটামিন ই ক্যাপসুল রূপচর্চায় বিশেষভাবে উপকারী। এতে করে পাওয়া যায় উজ্জ্বল এবং মসৃণ ত্বক। সেই সাথে মাথায় ব্যবহার করলে পাওয়া যায় মাথা ভর্তি চুল। কিন্তু ডাক্তারের সাথে পরামর্শ না নিয়ে যত্রতত্রভাবে ভিটামিন ই ক্যাপসুল খেলে হতে পারে নানা ধরনের সমস্যা। যার মধ্যে রয়েছে হরমঁনের ভারসাম্যহীনতা, অতিরিক্ত ওজনের সমস্যা, চুল পড়ার সমস্যা, প্রেসার জটিলতা ইত্যাদি। তাই নিজে নিজেই এই ধরনের পদক্ষেপ গুলি গ্রহণ করা একদমই উচিত নয়।
আপনি চাইলে আশেপাশে যারা ভিটামিন ই ক্যাপসুল নিজের মত করে ব্যবহার করেছেন তাদের এক্সপেরিয়েন্স গুলো শুনতে পারেন। আমি প্রায় সকল ব্যাপারেই আপনাদেরকে সচেতন করার চেষ্টা করে থাকি। কারণ দিনশেষে এটি একটি রাসায়নিক পদার্থ যেটি কিনা কোনভাবেই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া ব্যবহার করা উচিত নয়।
তবে আজকে বিশেষজ্ঞ এবং চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী ভিটামিন ই ক্যাপসুলের ব্যবহার সম্পর্কে আপনাদের সাথে আলোচনা করব। এক্ষেত্রে নিচে নিয়ম গুলি আপনাকে অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে।
রূপচর্চায় ভিটামিন ই ক্যাপসুলের ব্যবহারে কি কি উপকরণ প্রয়োজন হবে
• যেকোনো ফার্মেসি কিংবা কসমেটিকসের দোকান হতে ভিটামিন ই ক্যাপসুল কিনবেন।
• এগুলো সাধারণত সবুজ রঙের হয় কিন্তু যেগুলোর পাওয়ার বেশি সেগুলোর রং হয় কমলা। তবে উচ্চ পাওয়ারের কমলা গুলো কেনার দরকার নেই শুধুমাত্র সবুজ রঙের ভিটামিন ই ক্যাপসুল গুলোই রূপচর্চায় যথেষ্ট।
আবার অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন এটা যেহেতু খাওয়ার জিনিসটাই মুখে কিংবা ত্বকে ব্যবহার করা যায় কিনা। হ্যাঁ এর উত্তর হচ্ছে এগুলো ত্বকে কিংবা মাথায় ব্যবহার করা যায়। এমনকি ব্যবহারে কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই বললেই চলে।
চুল ও ত্বকের যত্নে ভিটামিন ই ক্যাপসুলের ব্যবহার
আপনি অনেকভাবেই এই উপাদানটি ব্যবহার করতে পারেন। চুল কিংবা ত্বকের যত্নে ব্যবহারে আলাদা আলাদা নিয়ম রয়েছে। তাই সঠিক উপায় গুলো জানা জরুরী। তা না হলে যতই ব্যবহার করতে থাকুন না কেন এতে করে উপকার তো হবেনা বরং দেখা যেতে পারে নানা ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া।
ত্বকের যত্নে কিভাবে ই ক্যাপসুল ব্যবহার করবেন
আপনি যদি এই পণ্যটি ত্বকে ব্যবহার করেন তাহলে অন্যন্য উন্নত সিরামের মতই ভালো ফলাফল পাবেন। সাধারণ কিংবা শুকনো ত্বকের ক্ষেত্রে এই ক্যাপসুলটি ফোঁটা ফোটা হাতে লাগিয়ে আস্তে আস্তে ত্বকে ম্যাসাজ করতে থাকুন।
কিন্তু তৈলাক্ত ত্বকে ব্যবহার করার জন্য এক ফোটা তেল দুই হাতে নিয়ে ঘষে মুখের দুই পাশে ৫ সেকেন্ডের জন্য চেপে ধরুন। এতেই হয়ে যাবে। কারণ তৈলাক্ত তেল এমনিতেই যেহেতু পিচ্ছিল কিংবা তেলে ভেজা থাকে তাই অতিরিক্ত ভাবে মেসেজ করা যাবে না। বয়স্করা এই ধরনের প্রসেসে সবচাইতে বেশি উপকার পাবেন।
চুলের যত্নে ভিটামিন ই ক্যাপসুল কিভাবে ব্যবহার করবেন
যাদের অধিক পরিমাণে চুল ঝরে যাচ্ছে তাদের ক্ষেত্রে এই উপাদানটি হতে পারে খুবই উপকারী। এর জন্য ২ থেকে ৩টি ক্যাপসুল ভেঙ্গে তার ভেতর থেকে তেলটা প্রথমে একটি পাত্রে নিয়ে নিন। তারপর সেখান থেকে অল্প অল্প করে মাথার ত্বক এবং চুলে লাগিয়ে দেন। এভাবে সারা রাত রেখে পরের দিন ধুয়ে ফেলুন।
পরের দিন আপনি চাইলে শ্যাম্পু করতে পারবেন। আর যদি শ্যাম্পু করার পরেও থেকে যায় তাহলে নারিকেল তেলের সাথে একটি ক্যাপসুল মিশিয়ে সেটি মাথায় ব্যবহার করতে পারেন।
মুখে যত্নে এবং নাইট ক্রিম হিসেবে ভিটামিন ই ক্যাপসুল
একটি কৌটায় কয়েকটি ক্যাপসুলের ভেঙে নিন। তারপর সেটিতে নাইট ক্রিম কিংবা বেবি ক্রিম মিক্স করে নিন। এটি রেগুলার ব্যবহার করতে পারবেন এবং পাশে পাবেন অতিরিক্ত কিছু ভিটামিন ই এর পুষ্টি গুণ।
একইভাবে বর্তমানে শীতকালীন মৌসুমেও বডি লোশনের সাথে ব্যবহার করেও গায়ে দিতে পারবেন।
শরীরের বিভিন্ন অংশের কালো দাগ দূর করতে
আমাদের মুখে ইত্যাদি জায়গায় মাঝে মাঝেই কালো দাগ দেখা দেয়। আমরা অনেক চেষ্টা করে থাকি এগুলো দূর করার কিন্তু সম্ভব হয় না। এর জন্য কয়েকটি ক্যাপসুল ভেঙে নিয়ে সেখান থেকে তেলটুকু বের করে নিয়ে কোনই হাটো এবং ইত্যাদি জায়গায় লাগান।
সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার ব্যবহারে ভালো উপকার পাবেন।
ঠোঁটকে গোলাপি করার উপায়
নিয়মিত ধূমপান ইত্যাদি কারণে আমাদের ঠোঁট মাঝে মাঝে কালচে আকার ধারণ করে। এক্ষেত্রে আপনার পছন্দের যে কোন লিপবাম কিংবা ভেসলিনের সাথে কিছু পরিমাণে এই ক্যাপসুলটি মিশিয়ে নিন। তারপর নিয়মিত ব্যবহার করুন দেখবেন ঠোট আগের থেকে অনেক বেশি গোলাপি হয়ে উঠেছে।
চোখের নিচের কালো দাগ দূর করার উপায়
আমি আগেই বলেছি এই ক্যাপসুলটি নানাবিধ ব্যবহার রয়েছে। কিছু পরিমাণে খাঁটি বাদাম তেলের সাথে যদি এই ক্যাপসুল মিশিয়ে সেটা চোখের নিচে ম্যাসাজ করেন মাঝে মাঝে তাহলেই কালকে কালচে ভাব গুলো চলে যাবে।
ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে ব্রণের দাগ দূর করার উপায়
একটা নির্দিষ্ট বয়সের পর প্রায় সকল ছেলেমেয়ে ব্রণের দাগের মতো সমস্যায় ভুগে থাকেন। এমনকি ব্রণ ভালো হয়ে গেলেও থেকে যায় এর দাগ বলি। ভিটামিন ই তেল খুবই উপকারী ভূমিকা পালন করে থাকে।
এর জন্য এক ফোটা দুই ফোটা করে ব্রণের দাগ গুলোর স্থানে ভিটামিন ই তেল লাগিয়ে রাখুন। এভাবে কিছুক্ষণ রেখে কয়েক ঘন্টা পর ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারের ফলে দেখবেন আপনার কালো দাগ গুণের দাগ গুলি দূর হয়ে গিয়েছে।
আমাদের শেষ কথা
তবে বুঝে না বুঝে যথযাত্রা এই ওষুধটি খাওয়া ঠিক নয়। শুকুরা বিভিন্ন কারণে রোগীদের এটি খাওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তবে নিজেদের অনুমান এবং মানুষের মুখের কথা শুনে কখনোই এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। তাই উপরেরটা নিয়ম গুলো ফলো করে আপনি ত্বকের চুল তাদের যত্নে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করতে পারেন।