বোবায় ধরা কি এবং কেন ধরনের ঘটনা ঘটে

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৬:৩৭:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ৯ বার পড়া হয়েছে

বোবায় ধরার কারণ গুলি কি কি

আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ইংরেজিতে বলা হয় স্লিপ প্যারালাইসিস এবং বাংলায় বলা হয় বোবায় ধরা। এটি হচ্ছে এমন একটি অবস্থা যখন ঘুমিয়ে পড়া ব্যক্তি ঘুম থেকে জাগার সময় শরীরের কোন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ নড়াচড়া করতে পারে না। এমনকি ঘুমের মাঝেও যদি তার চেতনা আসে তাহলে তার শরীরের উপর কোন ধরনের কন্ট্রোল থাকে না।

চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এ ধরনের সমস্যাকে বলা হয় স্লিপ প্যারালাইসিস। আবার ঘুমের মধ্যে পক্ষাঘাতও বলা হয়। এই ধরনের ঘটনার ঘটলে একজন ব্যক্তি কিছু সময়ের জন্য কথা বলা এবং নড়াচড়ার সমস্ত শক্তি হারিয়ে ফেলে। এই ধরনের বোবায় ধরা সাধারণত কয়েক সেকেন্ড থেকে ১ মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। এমনকি অনেকেই বেশ ভয় পেয়ে যান এবং ঘাবড়ে যান।

আমরা যখন ঘুমাই তখন সাধারণত দুটি পর্যায় থাকে। যার মধ্যে একটি হচ্ছে রেপিড আই মুভমেন্ট বা রেম এবং আরেকটি হচ্ছে নন রেম। রেম বা রেপিড আই মুভমেন্টের পর্যায়ে আমরা সাধারণত স্বপ্ন দেখা শুরু করি এবং শরীরে পেশি গুলো অনেকটাই নিষ্ক্রিয় অবস্থায় থাকে। আর এ সময় আমাদের চেতনাও থাকে না বিধায় আমরা শরীর খুবই কম নাড়াচাড়া করি।

বিভিন্ন স্নায়ু রোগ বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন বোবা ধরা আসলে এক ধরনের স্নায়ুজনিত সমস্যা। এটিকেও রেপিড আই মুভমেন্ট বা রেম এর অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

বোবায় ধরার কারণ গুলি কি কি

• পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমের অভাব। কিংবা দিনের যে সময় গুলোতে আপনি সাধারণত ঘুমান না সে সময় ঘুমিয়ে গেলে।। আবার নিজের বাসা থেকে অনেক দূরে কোথাও ঘুরতে গেলেও এ ধরনের সমস্যা হতে পারে।

• বোবায় ধরার কারণ গুলোর মধ্যে আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে নিয়মিত ধূমপান কিংবা মদ পান করলে।

• অনেক সময় পারিবারিক ইতিহাস থেকেও এটি হয়ে থাকে।

• বিভিন্ন ধরনের মানসিক সমস্যা থেকে বোবায় ধরা কিংবা স্লিপ প্যারালাইসিস হতে পারে।

বোবায় ধরার সমস্যার সমাধানে কে কে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেন

• নিয়মিত রাতের বেলা অন্তত ৬ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন। এ সময় মোবাইল কিংবা অন্যান্য ডিভাইস ব্যবহার না করাই ভালো।

• স্লিপ প্যারালাইসিস হতে মুক্তি পেতে প্রতিদিন রাতে ৭-৮ ঘুমানোর ঘুমানোর চেষ্টা করুন। সেই সাথে সকাল বেলা জেগে উঠুন। রাত জেগে মোবাইল চালানো কিংবা ইত্যাদি ডিভাইস চালানোর কারণে এই ধরনের সমস্যা গুলো বাড়তে পারে।

• ঘুমের জন্য দরকার শান্ত এবং নীরব পরিবেশ। ঘর যেন অন্ধকার থাকে এবং তাপমাত্রার যেনো সহনীয় পর্যায়ে থাকে। সম্ভব হলে ঘরের মধ্যে কিছু এয়ার ফ্রেশনার ব্যবহার করতে পারেন।

• বোবায় ধরা থেকে রক্ষা পেতে ঘুমানোর আগে মদ, ধূমপান, অতিরিক্ত চা, কফি ইত্যাদি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

• ঘুমাতে যাওয়ার কয়েক ঘন্টা আগে যদি কিছু পরিমাণে ব্যায়াম করে নিতে পারেন অথবা হাঁটাচলা করতে পারেন তাহলে ভালো হয়।

• দিনের বেলা অনেক লম্বা সময় ধরে ঘুমানো থেকে নিজেকে বিরত রাখুন।

অনেকে স্লিপ প্যারালাইসিস হলে বুঝতে পারেন না তার সাথে কি ঘটছে। তাই ভয় পেয়ে হতে পারে নানা ধরনের শারীরিক এবং মানসিক সমস্যা। আর যদি বুঝতে পারেন আপনার বোবায় ধরেছে তাহলে যত সম্ভব শান্ত থাকার চেষ্টা করুন সেই সাথে শরীরের নড়াচাড়া বন্ধ রাখুন। আর যদি সমস্যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয় এবং নিয়মিত এমনটাই করতে থাকে তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

OPXNews Stuff

OPX NEWS Stuff

বোবায় ধরা কি এবং কেন ধরনের ঘটনা ঘটে

আপডেট সময় : ০৬:৩৭:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৪

ইংরেজিতে বলা হয় স্লিপ প্যারালাইসিস এবং বাংলায় বলা হয় বোবায় ধরা। এটি হচ্ছে এমন একটি অবস্থা যখন ঘুমিয়ে পড়া ব্যক্তি ঘুম থেকে জাগার সময় শরীরের কোন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ নড়াচড়া করতে পারে না। এমনকি ঘুমের মাঝেও যদি তার চেতনা আসে তাহলে তার শরীরের উপর কোন ধরনের কন্ট্রোল থাকে না।

চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এ ধরনের সমস্যাকে বলা হয় স্লিপ প্যারালাইসিস। আবার ঘুমের মধ্যে পক্ষাঘাতও বলা হয়। এই ধরনের ঘটনার ঘটলে একজন ব্যক্তি কিছু সময়ের জন্য কথা বলা এবং নড়াচড়ার সমস্ত শক্তি হারিয়ে ফেলে। এই ধরনের বোবায় ধরা সাধারণত কয়েক সেকেন্ড থেকে ১ মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। এমনকি অনেকেই বেশ ভয় পেয়ে যান এবং ঘাবড়ে যান।

আমরা যখন ঘুমাই তখন সাধারণত দুটি পর্যায় থাকে। যার মধ্যে একটি হচ্ছে রেপিড আই মুভমেন্ট বা রেম এবং আরেকটি হচ্ছে নন রেম। রেম বা রেপিড আই মুভমেন্টের পর্যায়ে আমরা সাধারণত স্বপ্ন দেখা শুরু করি এবং শরীরে পেশি গুলো অনেকটাই নিষ্ক্রিয় অবস্থায় থাকে। আর এ সময় আমাদের চেতনাও থাকে না বিধায় আমরা শরীর খুবই কম নাড়াচাড়া করি।

বিভিন্ন স্নায়ু রোগ বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন বোবা ধরা আসলে এক ধরনের স্নায়ুজনিত সমস্যা। এটিকেও রেপিড আই মুভমেন্ট বা রেম এর অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

বোবায় ধরার কারণ গুলি কি কি

• পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমের অভাব। কিংবা দিনের যে সময় গুলোতে আপনি সাধারণত ঘুমান না সে সময় ঘুমিয়ে গেলে।। আবার নিজের বাসা থেকে অনেক দূরে কোথাও ঘুরতে গেলেও এ ধরনের সমস্যা হতে পারে।

• বোবায় ধরার কারণ গুলোর মধ্যে আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে নিয়মিত ধূমপান কিংবা মদ পান করলে।

• অনেক সময় পারিবারিক ইতিহাস থেকেও এটি হয়ে থাকে।

• বিভিন্ন ধরনের মানসিক সমস্যা থেকে বোবায় ধরা কিংবা স্লিপ প্যারালাইসিস হতে পারে।

বোবায় ধরার সমস্যার সমাধানে কে কে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেন

• নিয়মিত রাতের বেলা অন্তত ৬ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন। এ সময় মোবাইল কিংবা অন্যান্য ডিভাইস ব্যবহার না করাই ভালো।

• স্লিপ প্যারালাইসিস হতে মুক্তি পেতে প্রতিদিন রাতে ৭-৮ ঘুমানোর ঘুমানোর চেষ্টা করুন। সেই সাথে সকাল বেলা জেগে উঠুন। রাত জেগে মোবাইল চালানো কিংবা ইত্যাদি ডিভাইস চালানোর কারণে এই ধরনের সমস্যা গুলো বাড়তে পারে।

• ঘুমের জন্য দরকার শান্ত এবং নীরব পরিবেশ। ঘর যেন অন্ধকার থাকে এবং তাপমাত্রার যেনো সহনীয় পর্যায়ে থাকে। সম্ভব হলে ঘরের মধ্যে কিছু এয়ার ফ্রেশনার ব্যবহার করতে পারেন।

• বোবায় ধরা থেকে রক্ষা পেতে ঘুমানোর আগে মদ, ধূমপান, অতিরিক্ত চা, কফি ইত্যাদি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

• ঘুমাতে যাওয়ার কয়েক ঘন্টা আগে যদি কিছু পরিমাণে ব্যায়াম করে নিতে পারেন অথবা হাঁটাচলা করতে পারেন তাহলে ভালো হয়।

• দিনের বেলা অনেক লম্বা সময় ধরে ঘুমানো থেকে নিজেকে বিরত রাখুন।

অনেকে স্লিপ প্যারালাইসিস হলে বুঝতে পারেন না তার সাথে কি ঘটছে। তাই ভয় পেয়ে হতে পারে নানা ধরনের শারীরিক এবং মানসিক সমস্যা। আর যদি বুঝতে পারেন আপনার বোবায় ধরেছে তাহলে যত সম্ভব শান্ত থাকার চেষ্টা করুন সেই সাথে শরীরের নড়াচাড়া বন্ধ রাখুন। আর যদি সমস্যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয় এবং নিয়মিত এমনটাই করতে থাকে তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।