সহজভাবে চিকন হওয়ার উপায় কি

- আপডেট সময় : ১২:০৪:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪ ৪০ বার পড়া হয়েছে
আমাদের আশেপাশে অনেক মানুষ আছে যারা স্বাস্থ্য নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছেন। তাইতো চিকন হওয়ার উপায় সম্পর্কে তারা জানতে আগ্রহী হন। এর মধ্যে কেউ কেউ ছোটবেলা থেকে বেশ ভালো স্বাস্থ্যের অধিকারী আবার কেউ কেউ হঠাৎ করেই মোটা হয়ে গিয়েছেন।
তবে কারণ যাই হোক না কেন, স্বাস্থ্য অতিরিক্ত বা অনেক কম কোনোটিই ভালো নয়। আবার বিভিন্ন ধরনের প্রসাধনী, হারবাল ইত্যাদি ব্যবহার করেও স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে থাকি। তাইতো প্রাকৃতিক বা ঘরোয়া উপায়ে কিভাবে ওজন কমিয়ে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে পারবেন সে সম্পর্কে আলোচনা করব।
চিকন হওয়ার উপায় কি কি
কি কারনে আপনার ওজন বৃদ্ধি পাচ্ছে সেটি যদি ভালোভাবে খুজে বের করতে পারেন তাহলেই ওজন কমানোর উপায়ও বের করতে পারবেন। আমাদের খাদ্যাভ্যাস, জীবন যাপন এবং পারিপার্শ্বিক নানা কারণেই ওজন বেড়ে যেতে পারে।
শুধুমাত্র না খেয়ে থেকে কিংবা ডায়েট করে কখনোই সফল হতে পারবেন না। এর জন্য প্রয়োজন পুরো জীবন ধারায় পরিবর্তন। চলুন এবার বিস্তারিত জেনে নেওয়া যায়।
সঠিক খাদ্য অভ্যাস মেনে চলা
ওজন হ্রাস বা বৃদ্ধি যাই হোক না কেন খাবারের সঠিক নিয়ম মেনে চলতে হবে। ফলমূল, শাকসবজি, মাছ, মাংস, দুগ্ধ জাতীয় খাবার ইত্যাদি সবকিছুই তালিকাতে রাখতে হবে।
অতিরিক্ত ভাজাপোড়া, ক্যাফেইন জাতীয় খাবার আমাদের ওজন বাড়িয়ে দেয়। যদি ভেবে থাকেন না খেয়ে থাকলে ওজন কমতে থাকবে তাহলে সেটা ভুল ধারণা। চিকন হওয়ার উপায় হিসেবে প্রতিদিন সঠিক পরিমাণে খাদ্য গ্রহণ করতে হবে।
নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করা
প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট করে শারীরিক ব্যায়াম করা উচিত। সবচাইতে ভালো হয় ক্রিকেট, ফুটবল, ভলিবল, ব্যাডমিন্টন ইত্যাদি খেলায় অংশগ্রহণ করবে। সাঁতার কাটা এবং সাইকেল চালানো বেশ ভালো অভ্যাস। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এটি নিয়মিত চালিয়ে যেতে হবে।
পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা
সারাদিন অফিস কিংবা বিজনেসের কাজে ব্যস্ত থাকার ফলে খাওয়া দাওয়া সব ভুলে যাই আমরা। পানি আমাদের শরীরের সকল ধরনের বিষাক্ত প্রদার্থ বের করে দেওয়ার কাজ করে। তাই প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন।
পরিমিত পরিমানে ঘুমানো
সুস্থ শরীরের জন্য পরিমিত ঘুমও জরুরী। আমাদের মধ্যেও একটা ভুল ধারণা প্রচলিত আছে যে, ঘুমের কারণে ওজন বৃদ্ধি পায়। সেটি অতটা অবশ্য ঠিক নয়। একজন সুস্থ এবং প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য দৈনিক ৭ থেকে ৮ ঘন্টা অবশ্যই ঘুমাতে হবে। এমনকি সেটা আবার রাতের বেলা। সারারাত জেগে থেকে শুধুমাত্র দিনের বেলায় ঘুমালে হবে না।
চিনি এবং মিষ্টি জাতীয় খাবার
বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি জাতীয় খাবার, কোমল পানীয়, ক্যান্ডি ইত্যাদি মানব শরীরে চর্বি পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। তাই ওজন কমানোর জন্য চিনি যুক্ত খাবারের পরিমাণ কমিয়ে দিন।
সহজভাবে ওজন কমানোর উপায় গুলো কি কি
নিম্নের আরো কিছু কারণ ও পদ্ধতি ব্যাখ্যা করা হলো যাতে করে আপনা প্রাকৃতিকভাবেই অতিরিক্ত ওজন ঝড়াতে পারেন।
• বিভিন্ন ধরনের হোল গ্রেইন খাবার যেমন: ওট মিল, গমের রুটি ইত্যাদি ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। ফাইবার জাতীয় খাদ্য হওয়ায় এটা আমাদের পেট কে দীর্ঘ সময় ধরে রাখে।
• একবারে অনেক বেশি খাবার না খেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে অল্প অল্প করে খান। এতে করে মেটাবলিজম বৃদ্ধি পায় এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ হয়।
• প্রতিদিন সবুজ চা পান করতে পারেন।
• সুস্বাস্থ্যের জন্য শাকসবজি এবং ফলমূল খুবই কার্যকরী। মৌসুমী ফল গুলি নিয়মিত খেতে পারেন।
• নিজেকে সবসময় মানসিক দুশ্চিন্তা মুক্ত রাখার চেষ্টা করুন। অনেক সময় অতিরিক্ত দুশ্চিন্তায় থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য অতিরিক্ত ঘুম এবং এমন সব কার্যকলাপ করে বসে যাতে করে ওজন বৃদ্ধি পায়।
• যেকোনো ধরনের চিনিযুক্ত কোল্ড ড্রিংকস পরিহার করুন। শরীরকে হাইড্রেড রাখার জন্য পানির উপর নির্ভর করুন।
• দৈনন্দিন জীবনে কিছু পরিবর্তন আনতে পারেন। যেমন লিফটের পরিবর্তে সিড়ি ব্যবহার করুন, অল্প দূরত্বের রাস্তায় রিক্সার পরিবর্তে হেঁটে যেতে থাকুন ইত্যাদি।
• ডিম, মুরগি, মাছ, ডাল ইত্যাদি প্রোটিন জাতীয় খাবার নিয়মিত খান।
দেহের ওজন কমানোর সুবিধা কি কি
এতক্ষণ তো আমরা জানলাম চিকন হবার উপায় গুলো সম্পর্কে। এবার চলুন জেনে নেই এর কিছু সুবিধা আছে কিনা।
প্রথমেই আসে ডায়াবেটিসের বিষয়। ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকলে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়। এতে করে ডায়াবেটিসের ঝুঁকিও কম থাকে।
অতিরিক্ত ওজন উচ্চ রক্তচাপের জন্য দায়ী। তাই হাই ব্লাড প্রেসার থেকে মুক্ত থাকতে অবশ্যই আপনার ওজনকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
শরীরে বেশি পরিমাণে চর্বি এবং মাংস আমাদের হাড়ের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে। যেটি আর্থ্রাইটিস এবং অন্যান্য সমস্যার কারণ। শ্বাসকষ্ট এবং বুক ব্যাথাও হয়ে থাকে এই ওজনের সমস্যা থেকে।
উপসংহার
পরিশেষে সুন্দর দেহ এবং মন আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ায় এবং মানসিক চাপও কমায়। ওজন কমানোর উপায় গুলি অনুসরণের মাধ্যমে আপনি নিজেকে আরও ভালোভাবে দেখানোর সুযোগ পাবেন। তবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া যত্রতত্র ডায়েট করা উচিত নয়। নিজেকে ধীরে ধীরে পরিবর্তন করুন এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন।